আজগার আলী, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরা কলারোয়ায় সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় পূজা দুর্গোৎসবের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে উপজেলার ৩৯ টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলাব্যাপী সকল মণ্ডপে ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করে প্রতিমার অনুপম রূপে সাঁজাতে শেষ মুহূর্তে রঙ-তুলির বর্ণিল পরশে দেবী দুর্গাকে মোহনীয় সাজে সজ্জিত করা তুলেছেন। শনিবার দুপুরে মধ্যে সকল মণ্ডপে রঙের চূড়ান্ত কাজ শেষ হয়েছে বলে সংশ্রিষ্টরা জানায়।
শনিবার ( ৫ অক্টোবর) সকাল এগারোটার দিকে কলারোয়া হরিতলা পূজা মন্ডপে যেয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। মন্ডপে উপস্থিত সনাতন ধর্মালম্বীরা বলেন, সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে তারা দুর্গাপূজা প্রতিবারের ন্যায় এবারও উদযাপন করতে যাচ্ছেন।
উপজেলার বামনখালি পূজামণ্ডপের দায়িত্বরত অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র ঘোষ মুঠোফোনে জানান, তাঁরা উৎসবমুখর পরিবেশে এখানে দুর্গাপূজাসহ সকল পূজা নির্বিঘ্নে পালন করে থাকেন। সব ধরনের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির আলো ছড়িয়ে আসছেন তাঁরা।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনার পর থেকে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব এই দুর্গাপূজাকে ঘিরে তাদের ঘরে ঘরে এখন উৎসবের আমেজ। এবারের দুর্গাপূজার সার্বিক প্রস্তুতি, পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কথা হয় উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্র নাথ রায়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল, পূজা উৎযাপন পরিষদ নেতা অসিত কুমার ঘোষ ও নরেন্দ্র নাথ ঘোষের সাথে।
এঁরা সার্বিক প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবার উপজেলার সকল মন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হতে যাচ্ছে।
কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি দাবি করে তাঁরা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে প্রশাসনের তদারকি, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক তালা- কলারোয়া সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের উদ্যোগে বিএনপি নেতাকর্মীদের পূজা নিরাপত্তা-সুরক্ষা বিধানের দায়িত্ব প্রদান ও সর্বোপরি আপামর মানুষের প্রাণঢালা ভালোবাসায় আনন্দঘন পরিবেশে এবার দুর্গোৎসব উৎযাপন হবে ভলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সবখানে সম্প্রীতির বাণী তুলে ধরছেন। এজন্য তাঁরা উপজেলার সকল ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। থানা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ৩৯ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে।
এরমধ্যে কলারোয়া পৌরসভা এলাকার ৮টি মণ্ডপ হলো: তুলসীডাঙ্গা ঘোষপাড়া, তুলসীডাঙ্গা গোয়ালঘাটা, মুরারীকাটি উত্তর পালপাড়া, মুরারীকাটি দক্ষিণ পাড়া, মুরারীকাটি দক্ষিণ হরিসভা, গোপীনাথপুর ঘোষপাড়া. গোপীনাথপুর দক্ষিণ পাড়া ও ঝিকরা হরিতলা পূজামণ্ডপে।
দেয়াড়া ইউনিয়নের ৫ টি মণ্ডপ হলো: দেয়াড়া ঘোষপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দির. দেয়াড়া ঘোষপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, পাকুড়িয়া, পাটুলিয়া কেন্দ্রীয় সার্বজনীন পূজামণ্ডপ ও পাটুলিয়া সনাতন সার্বজনীন পূজামণ্ডপ। জয়নগর ইউনিয়নের ৫ টি মণ্ডপ হলো: খোর্দ্দ-বাটরা, জয়নগর মাতৃমন্দির, ধানদিয়া দাসপাড়া, জয়নগর মাঝের পাড়া, দক্ষিণ জয়নগর তরুণ সংঘ পূজামণ্ডপ। জালালাবাদ ইউনিয়নের ২টি মণ্ডপ হলো: কাশিয়াডাঙ্গা ও বৈদ্যপুর দাসপাড়া। কয়লা ইউনিয়নের ২টি মণ্ডপ হলো: কয়লা ঘোষপাড়া ও শ্রীপতিপুর দাস পাড়া।
লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের ২ টি মণ্ডপ হলো: লাঙ্গলঝাড়া ও খাসপুর। কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের ২ টি মণ্ডপ হলো আইচপাড়া পালপাড়া ও বাকসা দুর্গা মন্দির। সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের একমাত্র মণ্ডপ হলো: সোনাবাড়িয়া মঠমন্দির। যুগিখালি ইউনিয়নের ২ টি পূজামণ্ডপ হলো: বামনখালি বিনোদতলা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ ও ওফাপুর র্সাবজনীন মায়ের মন্দির। চন্দনপুর ইউনিয়নের ২ টি মণ্ডপ হলো: চন্দনপুর ও নাথপুর।
কেরালকাতা ইউনিয়নের ২ টি মণ্ডপ হলো: কেরালকাতা ঠাকুরবাড়ি ও সাতপোতা। হেলাতলা ইউনিয়নের ৩ টি মণ্ডপ হলো: দামোদরকাটি, হেলাতলা ও শুভংকরকাটি মাতৃমন্দির। কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের ৩ টি মণ্ডপ হলো: শিবানন্দকাটি, কুশোডাঙ্গা কালিবাড়ি ও কুশোডাঙ্গা সেনগুপ্ত পাড়া।