1. ra7665785@gmail.com : admin :
বৈষম্য বিরোধী ছাএ আন্দোলন, ছাএজনতার অভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ" - Alifnewstv.com
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২২ অপরাহ্ন

বৈষম্য বিরোধী ছাএ আন্দোলন, ছাএজনতার অভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ”

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৫ Time View

এস,কে অপু :সা ক্ষা ৎ কা র

ছাত্র জনতার বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশে বাক স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষ অন্যায়, অপকর্ম, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন এক বাংলাদেশের চিত্র ভেসে উঠেছে আমাদের চোখের সামনে।

বাংলাদেশের ছাত্র জনতার অভূতপূর্ব গণজাগরণ ও অভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দীর্ঘ্য ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিদায় সমকালীন বিশ্বে এক নজিরবিহীন ঘটনার অবতারণা করেছে। বিগত অবৈধ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারে বর্বরোচিত দমন নিপীড়নকে সম্পূর্ণরূপে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ৩৬ দিনের এক মরণপণ লড়াইয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা উৎখাত হয়েছে। যা বর্তমানে এ দেশের জেন-জি’দের কাছে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে পরিগণিত।

উক্ত দিনটি ৩৬ জুলাই নামে খ্যাত। জুলাইয়ের এ অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে। অন্তর্বর্তীকালীন এ সরকারে রয়েছে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা দু’জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিও। এছাড়া নির্দলীয় ও দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়েই গঠিত হয়েছে পুরো ব্যবস্থাটি। আমাদের অবশ্যই এ কথা মনে রাখতে হবে যে, সহস্র শহীদের রক্তের উপর দাঁড়ানো এ সরকার শুধুমাত্র একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নয়। বরং দেশের এক সংকটময় মুহূর্তে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সিংহভাগ মানুষের সমর্থনে গঠিত সরকার। অতএব দীর্ঘকালীন অপব্যবস্থাপনার এই রাষ্ট্রীয় জঞ্জাল পরিষ্কার করে একটু সুষ্ঠ কাঠামোতে দেশকে নিয়ে আসার ব্যাপারে তাদের কোন বিকল্প নেই।

আমরা দেখেছি সরকার এরই মধ্যে অর্থনীতির বন্ধ চাকা সচল করে বাজার ব্যবস্থার উন্নতি করতে শুরু করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলতে গেলে সেটা তো প্রায় ধ্বংসের দাঁড় প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল, সে দিকটা বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থা কাটিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছে।

দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকার ও শিক্ষার্থীরা মিলে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে স্পেশাল টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা বিনা লাভের দোকান নামে এক প্রকার স্পেশাল পন্য সরবরাহ চালু করেছে। তবে এর পর এক বিশৃঙ্খল অবস্থার জন্য দেশে এখনো রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতি ফিরে আসেনি। রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ছাড়া এটা অতিদ্রুত ফিরিয়ে আনাও সম্ভবপর নয়। সে দিক কেন্দ্র করে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রায়ই বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন, এটা অবশ্যই আশার বাণী আমাদের জন্য। এর বাইরেও অন্তর্বর্তী সরকারের এসব কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করতে দেশের ভেতরে ও বাহিরে চলছে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র। আমাদের সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

বর্তমান সরকারের সামনে এগুলো ছাড়াও বড় কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছ, যার অন্যতম হলো দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মুহূর্তে। এরপর সংস্কার সমেত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা, গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবার গুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, রাজনৈতিক দল হিসেবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগের দোসরদের বিচার করাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ সামনে।

বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের শাসনামলে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ও অনিয়মের আঁতুড় ঘরে পরিণত হয়েছিল। তাই দ্রুত রাষ্টীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা নৈতিক দায়িত্ব। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংস্কার আমলাতন্ত্র সহ রাষ্ট্রের সব স্তর থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসরদের অপসারণ, মুজীববাদী সংবিধান বাতিল, আওয়ামীলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করাসহ সমাজের নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সুস্থ সুন্দর জীবনধারণের আশু-ইস্যুগুলো সামনে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব বিষয়েও সমগুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। এ আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ও ছাত্র জনতার বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশে বাক স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষ অন্যায়, অপকর্ম, ভন্ডামি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে।

এতে করে নতুন এক বাংলাদেশের চিত্র ভেসে উঠেছে আমাদের চোখের সামনে। এছাড়া দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তনের যে আশা আকাঙ্খা দেখা যাচ্ছে, তার সবকিছু মিলিয়ে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, নতুন এক বাংলাদেশ বিনির্মানের অপেক্ষায় পুরো জাতি।

লেখকঃ প্রতিনিধি, বৈষম্যবিরোধী ছাএ আন্দোলন, সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category