উজ্জ্বল কুমার সরকারঃ
নওগাঁর পোরশার সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া পুনর্ভবা নদির পানি বেড়ে যাওয়ায় ডিঙ্গি নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত পোরশার কারিগররা। নদিতে নতুন পানি আসায় এলাকার জেলে সহ বাসিন্দারা নতুন নৌকা তৈরি এবং পুরাতন নৌকা মেরামত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এই নদিকে ঘিরে যারা জেলে পেশাজীবী হিসাবে বসবাস করেন তারা এখনই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ কারণে উপজেলা নিতপুরে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। আর নদীর আশেপাশের এলাকায় কেউকেউ পুরাতন নৌকায় লাগাচ্ছেন আলকাতরা আবার ভাঙ্গা পুরাতন নৌকায় দিচ্ছেন জোড়াতালি। কেউবা নতুন নৌকা তৈরি করে নিতে মিস্ত্রিদের দিচ্ছেন তাগাদা। সব মিলিয়ে নৌকা তৈরীর কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। পোরশা উপজেলায় বর্ষাকালে পুনর্ভবা নদি ভরে গেলে জেলেরা এই পানিতে মাছ শিকার করে থাকেন। এ কাজেই নৌকা বেশী ব্যবহার হয়ে থাকে। এ কারণে এসময় ব্যাপকভাবে নৌকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ফলে কারিগর মিস্ত্রিরা এসময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। উপজেলার নিতপুর সদরে টেলিফোন এক্সচেঞ্জের পাশে নতুন নৌকা তৈরি এবং পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ করছেন কারিগররা। নৌকার কারিগর গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা গ্রামের কালো মিস্ত্রি জানান, তারা তাদের উপজেলা থেকে পোরশা উপজেলায় এসে নৌকা তৈরী করেন। তারা কারখানার পাশেই থাকেন। সাধারনত নৌকা তৈরিতে কড়ই ও মেহগনি কাঠ বেশি ব্যবহার করা হয়। তবে ডিঙ্গি নৌকা তৈরিতে আবার কেউকেউ কাঁঠাল কাঠও ব্যবহার করে থাকেন। এসব নৌকা তৈরিতে তারকাঁটা, আলকাতরা, টিনের পাত ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। একটি ডিঙ্গি নৌকা তৈরী করতে সাধারণত ৫-৬জন শ্রমিক লাগে। এতে একদিনে একটি ডিঙি নৌকা তৈরি করে শেষ করা যায় বলে তিনি জানান। মালিক নিজে কারিগর দিয়ে নৌকা তৈরি করে নিলে খরচ বেশী এবং টেকসই হয়। আর কেউ অর্ডার দিয়ে তৈরি করে নৌকা নিলে দাম একটু কম হয় এবং টিকসইও কম হয়। অপর একজন মিস্ত্রি রবিউল ইসলাম জানান, ৯ থেকে ১০ এবং ১৪ হাত পর্যন্ত লম্বা ডিঙ্গি তৈরী করছেন তারা। আর রকমভেদে এসব নৌকার দাম সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে ৯৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তিনি জানান, পুনর্ভবা নদি ছোট নদি হওয়ায় শুধু মাছ ধরার জন্য ডিঙি নৌকার অর্ডার বেশি পাওয়া যায়। তবে দু-একটি বড় নৌকার অর্ডারও হয়। তারা তাদের নৌকা তৈরীর কারখানায় নিয়মিতভাবে ৫/৬জন কারিগর কাজ করেন বলে জানান। তবে কাজ বেশী হলে কারিগরের সংখ্যাও বাড়াতে হয়। তারা বছরে ৩ মাস নৌকা তৈরী করেন বলে জানান
নওগাঁ।